সঠিক পরিকল্পনা করে তবেই ব্যবসাতে পা রাখা উচিত ।

Raquibul islam

ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য হতে পারে নিজের জন্য পরিশ্রম করা, ভালো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে অন্যের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। একটি দেশের শক্ত অর্থনীতির জন্য দরকার অনেক উদ্যোক্তা। শুধুমাত্র চাকরীজীবি সৃষ্টি করে একটি দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড শক্ত হয় না।

১৯১২ সালে ঐতিহাসিক চৈনিক বিপ্লবের বেশ কিছুদিন পর চীন সরকার তাদের দেশে ১২ বছর তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখেছিলো। চীন সরকারের বক্তব্য ছিল, এত ছেলেমেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে কি করবে? কোথায় চাকরি পাবে? কেই বা চাকরী দিবে? এত হাজার হাজার বেকারকে চাকরী দেয়ার মত প্রতিষ্ঠান চীনে নেই। এই সময়টায় চীন তাদের ছেলেমেয়েদের নানা ধরনের ট্রেড কোর্সে আধুনিক প্রশিক্ষন দিয়েছিলো।

স্বল্প মেয়াদী এই সব কোর্স শিখে চীনের ছেলেমেয়েরা স্বাবলম্বী হয়ে গেলো। প্রতিটি বাড়ি গড়ে উঠল একটা ছোট কারখানায়। পরিবারের সবাই সেখানে কাজ করে। বড় ফ্যাক্টরী করার আলাদা খরচ নেই। ফলে পন্যের উৎপাদন খরচ কমে গেলো। শুরু হলো চাইনিজ অর্থনীতির শক্তিশালী যাত্রা। বর্তমানে যে কোন পন্য স্বস্তায় উৎপাদন করার সক্ষমতায় তাদের ধারে কাছে কেউ নেই। পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলে চাইনিজ পন্যের প্রসার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বিশ্ব বানিজ্যে চীন এক অপ্রতিরোধ্য পরাশক্তি। উপযুক্ত মুল্য দিলে তারা এমন জিনিস বানিয়ে দেবে যার গ্যারান্টি আপনি চাইলে ১০০ বছরও দিতে পারবেন।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশের লেখাপড়ার প্রেক্ষাপট চাকুরীর জন্য নির্মিত। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা অবস্থায় আমাদের ছাত্রছাত্রীদের মনে অবচেতনভাবে চাকুরীর কথা প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়। নিজের পায়ে দাড়ানো, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি, উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি-এই ধারনাগুলো খুব কমই রয়েছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়। পাশাপাশি আমাদের অন্তরে গেঁথে আছে, কাজের মুল্যায়নে জাত ও শ্রেণী চেতনা তথা কাজের উঁচু নিচু শ্রেনীবিভাগ।

আমার এক আগের পোস্টে উল্লেখ্য করেছিলাম, এই দেশে ধনী পরিবারের একজন সন্তান বেকার থাকাকালীন সময়ে সমাজে যে সম্মান পায়, গরীব পরিবারের যে সন্তানটি পরিবারের স্বচ্ছলতার স্বার্থে অথবা একটু বাড়তি আয়ের জন্য যখন কোন ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টে যখন ওয়েটার হিসেবে কাজ করে তখন সেই সম্মানের সিকিভাগও তিনি পান না। আমাদের কাছে সে শুধুই একজন সামান্য ওয়েটার। অথচ শিক্ষা বলে কর্মই সকল সম্মানের মানদন্ড।

আমরা যারা ব্যবসা করতে আগ্রহী, তারা অনেকেই জানি না, ব্যবসা শুরু ক্ষেত্রে আমাদের দুর্বলতা কোথায়? ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা কিভাবে অর্জন করা যায়, ব্যাংক থেকে কিভাবে অর্থনৈতিক সাহায্য পাওয়া যায়?

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের বিনিয়োগ ধারনা, বৈচিত্রতা এবং সৃজনশীলতা প্রায় শূন্যের কোঠায়। এখানে ব্যবসা নির্ধারিত হয়, অন্যরা কি ব্যবসা করে সাফল্য পেয়েছে তাঁর ভিত্তিতে, নিজেদের দক্ষতা বা বুদ্ধিমত্তার ভিত্তিতে নয়।

বিষয়টি এমন নয় যে, যে ব্যবসা অন্য একজন ইতিমধ্যে করেছে, আপনি সেই ব্যবসা করতে পারবেন না। অবশ্যই আপনি অন্যকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে যে কোন ব্যবসায় আগ্রহী হতে পারেন। কিন্তু সেই ব্যবসায় বিনিয়োগের পুর্বে আপনাকে এর খুঁটিনাটি বুঝে নিতে হবে, অন্তত মোটামুটি ধারনা রাখতে হবে। ক্রেতাদের সেই গৎবাঁধাই পন্য কি দেবেন নাকি আরো কিছুটা আকর্ষনীয় করে উপস্থাপন করবেন, গুনগত মান আরো ভালো করবেন, সেটাও আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ন বিবেচ্য বিষয়। মনে রাখবেন, মানুষ ইতিবাচক পরিবর্তন পছন্দ করে। তাই যে কোন প্রচলিত ব্যবসায় যদি আপনি ইতিবাচক কোন পরিবর্তন এনে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারেন, তখন সফলতা একটি লজিক্যাল সিকোয়েন্স।

বিনিয়োগে সৃজনশীলতা শব্দটা হয়ত বহুল প্রচলিত নয়। তবে এর মুল অর্থ সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। বিনিয়োগের সৃজনশীলতা মানে হলো নিত্য নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্র খুঁজে বের করা। সবাই যা করছে, গতানুগতিক ধারা অবলম্বন না করে, নতুন নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।

বিশ্লেষকরা বলেন, অবকাঠামোর সমস্যা, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারনে দেশে বেসরকারী বিনিয়োগ বাড়ছে না। এটা হয়ত বড় ব্যবসা বা শিল্পের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিন্তু আমাদের মত মধ্যবিত্তের জন্য ‘আস্থার’ অভাবই হচ্ছে বিনিয়োগ করে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারন। প্রায় সকল ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় দেশের ব্যাংকের তারল্য বাড়ছে। ব্যাংকগুলো এখন প্রচুর অলস অর্থ নিয়ে বসে আছে।

তাই তুলনামুলক কম ঝুঁকির বিনিয়োগের জন্য সবার আগে প্রয়োজন-
১) যে কাজে বিনিয়োগ করবেন, সেই কাজ সম্পর্কে আপনার পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা।
২) আলোচ্য বিষয়ে আপনার আগ্রহ বা প্যাশন।
৩) মার্কেট রিসার্চ।
৪) একটি সম্ভাব্য পাইলট প্রজেক্ট।
৪) সম্ভাব্য ক্রেতা সম্পর্কে ভালো ধারনা।
৫) কাস্টমার কেয়ার।

আজকে এই পর্যন্তই, সবার মঙ্গল কামনা করে আজকে বিদায় নিচ্ছি।

Raquibul Islam Rakib

Founder & CEO Ponnobd 

16 thoughts on “সঠিক পরিকল্পনা করে তবেই ব্যবসাতে পা রাখা উচিত ।

  1. Szpiegowskie Telefonu

    Jeśli masz wątpliwości co do działań swoich dzieci lub bezpieczeństwa ich rodziców, możesz włamać się do ich telefonów z Androidem z komputera lub urządzenia mobilnego, aby zapewnić im bezpieczeństwo. Nikt nie może monitorować przez całą dobę, ale istnieje profesjonalne oprogramowanie szpiegowskie, które może potajemnie monitorować działania telefonów z Androidem, nie informując ich o tym.

  2. Anonymous

    Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you.

  3. binance

    Thank you for your sharing. I am worried that I lack creative ideas. It is your article that makes me full of hope. Thank you. But, I have a question, can you help me?

  4. Inscription

    I don’t think the title of your article matches the content lol. Just kidding, mainly because I had some doubts after reading the article.

  5. binance

    I don’t think the title of your article matches the content lol. Just kidding, mainly because I had some doubts after reading the article.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *