বিক্রয় বৃদ্ধির ডাইনামিক কৌশল

বিক্রয় বৃদ্ধির ডাইনামিক কৌশল

 বিক্রয় বৃদ্ধির ডাইনামিক কৌশল

যারা নতুন ব্যবসায় করছেন, তাদের জন্য একটি পণ্য বিক্রয় হওয়া অনেক বড় কিছু, অনেক ক্ষেত্রে তারা ভাবেন লাভ এর দরকার নেই, অন্তত বিক্রয় হোক। আর যারা অভিজ্ঞ এবং দক্ষ তাদের জন্য প্রতিটি বিক্রয় যেন এক একটি খেলা, যার মধ্যে তারা আনন্দ খুজে পায়।

কিন্তু কেন এমন হয়?
অভিজ্ঞ এবং দক্ষ মার্কেটাররা যখনি তাদের পণ্য বা সার্ভিস এর মার্কেটিং করে তারা কিছু নির্দিষ্ট কার্যকরী নিয়ম প্রয়োগ করে, যা নতুনরা আয়ত্ত না করা পর্যন্ত সফলতা পায় না। আপনি যদি নতুন মার্কেটার হয়ে থাকেন বা অনেক দিন যাবত কাজ করছেন কিন্তু সফলতা পাচ্ছেন না, তাদের জন্য কিছু কৌশলঃ

১. সঠিক উত্তর জেনে নিনঃ

সবার প্রথমেই আপনাকে কিছু প্রশ্নের উত্তর সঠিক ভাবে জেনে নিতে হবে। পণ্যের কোন দিকটি সবচেয়ে ভালো? কাস্টমার বা গ্রাহক আপনার পণ্যের বা সার্ভিসের কোন দিকটি বেশি পছন্দ করে, আপনার পণ্যের জন্য তারা কত ব্যয় করতে ইচ্ছুক ইত্যাদি। এই প্রশ্নগুলোর পরিষ্কার উত্তর যদি আপনার কাছে না থাকে তাহলে আপনি আপনার পণ্যের বা সার্ভিস সঠিক ভাবে তাদের সামনে তুলে ধরতে পারবেন না এবং সেটা প্রভাব পরবে আপনার বিক্রয় এ।

২. ক্রেতার প্রয়োজনকে বিক্রয় করুনঃ

আপনি যা বিক্রয় করবেন তা যেন হয় ক্রেতার প্রয়োজন। কোন অপ্রয়োজনীয় পণ্য বা সার্ভিস কেউ কিনবে না। তাই কাস্টমার বা গ্রাহকের প্রয়োজন কোন সার্ভিসটি তা খুজে বের করুন। তার সেই প্রয়োজনের উপর সর্বোচ্চ গুরুত্বদিন এবং প্রয়োজনকে বিক্রয় করুন। একটু ভেবে দেখুন এমনটা হয়ে আসছে অনেককাল থেকে, হয়ত আপনি নিজের ব্যবসায় এর সময় খেয়াল করে উঠতে পারেন নি, যেমন – স্যাম্পু এর মিনি প্যাক ইত্যাদি।

৩. স্মার্ট মূল্য নির্ধারন করুনঃ

প্রতিটি পণ্য বিক্রয়ের জন্য মূল্য একটি গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। মূল্যের উপর নির্ভর করে পণ্য বিক্রয় বৃদ্ধি পায় আবার হ্রাসও পায়। অনেকে মনে করে পণ্যের মূল্য কমিয়ে দিলে বিক্রয় বৃদ্ধি পাবে, এটা ঠিক নয়। অনেক পণ্যের মূল্য বেশি থাকার পরও তাদের বিক্রয় বেশি হয়। এখানে কোয়ালিটি অনেক প্রভাব ফেলে। আপনি বেশি মূল্যেও অনেক বিক্রয় করতে পারবেন যদি সেই কাস্টমারা যতটুকু প্রত্যশা নিয়ে আপনার উচ্চ মূল্যের পণ্য কিনবে সেই প্রত্যাশা পূরন হয়। তাই মূল্যের সাথে কোয়ালিটির সম্বনয় করে মূল্য নির্ধারন করতে হয়। যখনই কোন পণ্যের উচ্চ মূল্য নির্ধারন করবেন অবশ্যই কাস্টমারের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে নিবেন। একটা বিষয় এসে যায় যে, অনেকে উচ্চ মূল্য দেখেই চলে যান বা হ্রাস মূল্য দেখে নিজেই ভেবে নেন যে পণ্য এর কোয়ালিটি হয়ত ভালো না, এ অবস্থায় বলে রাখা ভালো হয়ত পণ্য এর কোয়ালিটি অনেক ভালো হওয়ায় আপনি উচ্চ মূল্য দিয়েছেন বা আপনার বিক্রয় বৃদ্ধি বা ব্রান্ডিং এর জন্য হয়ত হ্রাস মূল্য দিয়ে ছিলেন এবং তা না বুঝেই ক্রেতা চলে গিয়েছেন, এমন অবস্থায় আপনি একটু শেয়ার করবেন তাদের সাথে কেনো উচ্চ মূল্য বা কেনো হ্রাস মূল্য, আশা করি ক্রেতা বিষয়টি বুজবেন এবং আপনাকে প্রাধান্য দিবেন।

৪. ৩টি ম্যাজিক পদক্ষেপ গ্রহন করুনঃ

ম্যাজিক! প্রতিটি মার্কেটারের সফলতার পিছনে ৩টি ম্যাজিক পদক্ষেপ থাকতেই হয়, তা হল জিজ্ঞাসা করুন, শুনুন এবং পদক্ষেপ গ্রহন করুন। আপনি যদি আপনার ব্যবসায়ে এই ৩টি পদক্ষেপ এর প্রয়োগ না করেন তাহলে আপনার সেল বৃদ্ধি পাবে না। তাই প্রথমে জিজ্ঞাসা করুন আপনার গ্রাহক বা কাস্টমারকে তার প্রয়োজন কি? তিনি আপনার থেকে কি চান? কাস্টমার বা গ্রাহক আপনার কাছে সকল কিছু বললেও অনেক কিছু বাকি থেকে যায় বা সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারে না। সেই বিষয় গুলো আপনাকে জিজ্ঞাসা করে জানতে হবে তাদের কথা ভালোভাবে শুনতে হবে এবং তার অনুসারে কাজ করতে হবে। তাহলেই কাস্টমারকে সঠিক সার্ভিস দিতে পারবেন এবং সন্তুষ্ট করতে পারবেন। যা আপনার বিক্রয় বৃদ্ধি করবে।

এ বিষয়টাও নতুন কিছু নয়, যেকোনো মার্কেটে যান, একজন বিক্রয় কর্মীর সাথে কথা বলুন, উনি এই ৩টি কাজ করবেন অবশ্যই। কিন্তু আমাদের ফেসবুক পেজে কোন মেসেজ আসলেই আমরা কথা না বলে, একটা কপি পেস্ট মেসেজ দিয়ে দেই যে অর্ডার এর জন্য আপনার নাম, মোবাইল নাম্বার, ঠিকানা ইত্যাদি দিন। কিন্তু আপনি যদি কথা বলেন ভালভাবে এবং একটু সময় দিন তাহলে একটা সম্পর্কও তৈরি হতে পারে যার মাধ্যমে পরবর্তীতে কাস্টমার প্রথমেই আপনার পেজে আসবেন এবং আপনার কাছে ভালো কি পণ্য আছে তা জানতে চাইতে। এছাড়াও প্রথমবার পণ্য না কেনার পরিকল্পনা থাকলেও সে আপনার কথায় খুশি হয়ে পণ্য কিনে ফেলতে পারেন।

৫. এটিটিউট পরিবর্তন করুনঃ

আমাদের দেশের চাকুরী বা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এটিটিউট। এই সমস্যা দূর করতে না পারলে বিক্রয় বৃদ্ধি করা যাবে না। যেমনঃ নেতিবাচক মনোভাব, কনফিডেন্সের অভাব, আগ্রহের অভাব, কাস্টমারের রিয়েকশনকে ইতিবাচকভাবে না নেওয়া, বিক্রিত পণ্য ফেরত না নেওয়া, কাস্টমারের প্রতি অল্পতেই বিরক্ত হওয়া, কাস্টমারকে সম্মান না দেয়া, অনলাইন এ চ্যাটিং হচ্ছে তাই নিজেই ভাব নিয়ে কথা বলা ইত্যাদি। এই ধরণের মনোভাব কাস্টমার থেকে আপনাকে দূরে রাখবে, আপনি কাস্টমারের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারবেন না। নিজেকে এই ধরণের সমস্যা থেকে মুক্ত করুন এবং ব্যবসায়ের বিক্রয় বৃদ্ধি করুন।

৬. কাস্টমারকে শেয়ার করতে বলেনঃ

আপনি যদি ভালো সার্ভিস বা পণ্য সরবরাহ করেন তাহলে কাস্টমার তা অন্যের কাছে শেয়ার করতে পছন্দ করে। তবে শুধু তাদের আশায় বসে থাকলে হবে না। মাঝে মাঝে তাদের অনুপ্রানিত করতে হবে, তাদের বলতে হবে, তারা যেন আপনার পণ্য বা সার্ভিস অন্যদের কাছে শেয়ার করে। তাহলে তা আপনার বিক্রয় বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখবে। কিন্তু এই বলা এর ব্যাপারটাও বুদ্ধিমত্তার সাথে করতে হবে, আপনি তাকে অনুরোধ করতে পারেন, যদি আপনার পণ্য তার ভালো লেগে থাকে তাহলে তিনি যেন তার কাছের মানুষদের সাথে শেয়ার করে এবং সম্ভব হলে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এ শেয়ার করেন।

৭. সম্পর্ক তৈরি করুনঃ

একজন কাস্টমার বা গ্রাহক শুধু পণ্য বা সার্ভিস ক্রয় করলেই কাজ শেষ হয়ে যায় না। কাস্টমারকে কিভাবে ধরে রাখতে হবে সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ন। সেজন্য সর্বদা কাস্টমারের সাথে সুসম্পর্ক তৈরির দিকে বেশি গুরুত্বদিন। কাস্টমারের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করা গেলে তারা বার বার ফিরে আসে এবং পণ্য ক্রয় করে। এর জন্য নতুন কাস্টমার তৈরির মত মার্কেটিং করতে হয় না। সুসম্পর্ক তৈরি করতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অফার, পূর্বের গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধা ইত্যাদি দিতে পারেন।

এ জন্য আপনি কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজমেন্ট এর কিছু দিক অবলম্বন করতে পারেন, যেমন তাদের ফোন বা ইমেইল এ শুভদিন গুলোর বার্তা পাঠানো।

৮. কর্মীদের পরিপূর্নভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করুনঃ

একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা হল প্রতিষ্ঠানের অন্যতম সম্পদ। এই সম্পদের সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। তাদেরকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষন দিন। কিভাবে কাস্টমারের সাথে কথা বলতে হবে, কিভাবে কাস্টমারের সাথে যোগাযোগ করতে হয়, পণ্য বা সার্ভিস সম্পর্কে পরিপূর্ন ধারণা রাখা, কাস্টমারকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা ইত্যাদির জন্য প্রশিক্ষন দিন। মনে রাখতে হবে কাস্টমার কোন প্রশ্ন করলে সেই প্রশ্নের উত্তর যেন সে সঠিকভাবে পায়। সকল ক্ষেত্রে তাদের আত্ববিশ্বাস বৃদ্ধি করার চেষ্টা করুন। কারণ কর্মীদের আত্ববিশ্বাস পণ্য বিক্রয়ে অনেক সহায়তা করে।

বিষয়টা এমন নয় যে, আমার এই লেখা এর মাধ্যমে আপনারা প্রথমবার এই বিষয় গুলো জানলেন, আপনারা সবাই এই বিষয় গুলো ভালো করেই জানতেন, হয়ত বিভিন্ন কাজের চাপে খেয়াল করেন নি, যেহেতু মার্কেটিং এর উপর আপনার ব্যবসায় এর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তাই এই বিষয় এ একটু মনযোগী হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। আমরা সবাই মার্কেট এর উন্নয়ণ চাই। আপনার আমার এবং সবার উত্তম পদক্ষেপ গুলোই মার্কেট এর উন্নয়ণ নিয়ে আসবে।

🎲 আপনাকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি যদি আমাদের এই ছোট্ট উদ্যোগ আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে সর্বদা আমাদের পাশে থেকে পোস্ট গুলোতে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করে আমাদের কাজের স্পৃহা আরো বাড়িয়ে দিতে আপনারা বিশেষ ভূমিকা রাখবেন এবং সেই সাথে আপনার একটি শেয়ার হয়তো আপনার নিকটস্থ কারো জন্য একটি নতুন দরজা খুলে দিতে পারে ।

আপনারা সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, ধন্যবাদ সবাইকে ।

2 thoughts on “বিক্রয় বৃদ্ধির ডাইনামিক কৌশল

  1. Suivre Téléphone

    Cela peut être ennuyeux lorsque vos relations sont perturbées et que son téléphone ne peut pas être suivi. Maintenant, vous pouvez facilement effectuer cette activité à l’aide d’une application d’espionnage. Ces applications de surveillance sont très efficaces et fiables et peuvent déterminer si votre femme vous trompe.

  2. Suivre le téléphone

    urveillez votre téléphone de n’importe où et voyez ce qui se passe sur le téléphone cible. Vous serez en mesure de surveiller et de stocker des journaux d’appels, des messages, des activités sociales, des images, des vidéos, WhatsApp et plus. Surveillance en temps réel des téléphones, aucune connaissance technique n’est requise, aucune racine n’est requise.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *